পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) নামাজের স্থানে লাগানো হয়েছে তালা। তবে টিএসসি কতৃপক্ষের দাবি এ বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। গতকাল বুধবার রাতে দেওয়া হয় এ তালা। তাই যোহরের নামাজ পড়তে এসে রোজাদার ছাত্রীরা ফিরে গেলেও আছরের সময় তালা খুলে দেয় প্রশাসন। এর আগে মঙ্গলবার ছাত্রীদের একটি পক্ষের জোরপূর্বক নামাজ আদায়ের পর বিষয়টি নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে। আগে থেকেই ছাত্ররা সেখানে নামাজ পড়তে পারতেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার ছেলেদের নামাজের জায়গার পশ্চিম দিকে যে জায়গাটায় ছাত্রীরা নামাজের স্থান তৈরি করেছিল সেটা এখন ফাঁকা। নেই সেই পর্দা, পার্টিশন আর জায়নামাজ। যেই গেট দিয়ে সেখানে প্রবেশ করতে হয় সেখানে তালা লাগানো। ছাত্রীদের নামাজের জায়গার পাশেই ছিল ছেলেদের নামাজের স্থান। তালা দেয়ায় ছেলেরাও আর সেখানে নামাজের জন্য প্রবেশ করতে পারছিল না। এতে করে অনেকেই নামাজ পড়তে এসে ফিরে যেতে হয়েছে। তবে তা ছিল যোহর পর্যন্ত। বেলা সাড়ে তিনটা নাগাদ শিক্ষার্থীদের চাপে পড়ে খুলে দেওয়া হয় তালা। তালা দেওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দেয় তীব্র ক্ষোভ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, মেয়েদের নামাজ পড়ার বিষয়টাকে কেন্দ্র করে তারা এখন ছেলেদের জন্যও নামাজের পথ রুদ্ধ করেছে। এ যেন সমস্যা সমাধানের নামে উল্টো তা তীব্র করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউটসের সিনিয়র রোভারমেট উবাইদুল্লাহ রিদওয়ান বলেন, টিএসসি অভ্যন্তরে নামাজের জায়গাটি তালাবদ্ধ করায় আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষুব্ধ। এই জায়গাটিতে অনেকদিনধরেই শিক্ষার্থীরা নামাজ পড়ে আসছিলো। আমি টিএসসির কয়েকটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার সুবাদে টি এস সি তে অনেক সময় অবস্থান করতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ মিটিং বা কাজের ফাঁকে টিএসিসিতেই নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু এই জায়গাটি তালাবদ্ধ করে দিলে আমাদের নামাজের অসুবিধা হবে। আমাদের প্রত্যাশা এই জায়গাটি দ্রুতই সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হোক।
আহনাফ সৈয়দ খান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, রাতের আঁধারে কে বা কারা মেয়েদের জন্য করা নামাজের জায়গার পার্টিশন, পর্দা খুলে নিয়েছে, সেই সাথে ছেলেদেরসহ পুরো নামাজের জায়গাটায় তালা ঝুলিয়েছে তা জানে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন! সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাইলে তারা জানায় ক্যামেরা বন্ধ ছিলো। ক্যামেরা কেন বন্ধ থাকবে? আর এখন পর্যন্ত কেনই বা তালা ঝুলছে? এটা কি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নয়? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
এটা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার সামিল মনে করে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিসা ইসলাম সাকাফি বলেন, যারা এই জঘন্য কাজ ঘটিয়েছে তাদের পরিচয় দ্রুত উন্মোচন করা হোক এবং জবাবদিহি করতে বাধ্য করা হোক।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর ইনকিলাবকে বলেন, তারা (ছাত্রীরা) তো এটা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় তৈরি করেনি। আমরা তাদের কয়েকদিন সময় দিতে বলেছি কিন্তু তারা সেটা দেয়নি। আমরা তাদেরকে তাদের অবস্থায় ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু কে কখন কীভাবে এসব উঠিয়ে নেয় আমি জানি না। মসজিদে তালা দেওয়ার বিষয়টা প্রশাসনিকভাবে হয়েছে নাকি অন্য কোনো ভাবে হয়েছে সেটাও জানেন না বলে জানান আলী আকবর। এদিকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের কথা বললে তিনি জানান দীর্ঘদিন ধরেই সিসিটিভি অকেজো হয়ে আছে। টেকনিশিয়ানকে অনেকবার চিঠি দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
টিএসসির উপদেষ্টা ড. সিকদার মনোয়ার মোর্শেদও এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে জানি না। আমি জরুরী কাজে ঢাকার বাইরে আছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, টিএসসি হলো একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জায়গা। এখানে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি চলবে না। আমাদের কাছে খবর আছে এ বিষয়ে ধর্মীয় উস্কানি দেয়া হচ্ছে। টিএসসির পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজ আদায়ের কথা জানান তিনি। তবে এর আগে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, টিএসসিতে মেয়েদের জন্যও নামাজের স্থান থাকা ভালো।
এর আগে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্রী টিএসসিতে নামাজের স্থান তৈরি করতে গেলে প্রশাসন বাধা দেয়। তাদের সেই বাধাকে উপেক্ষা করে নামাজ আদায় করেন শিক্ষার্থীরা। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।